ঢাকা,সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফে কাউন্সিলরের বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা ঃ উভয় পক্ষে আহত- ১২

sontrasi hamlaগিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ ::

টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এক কাউন্সিলরের বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এঘটনায় দুইজন অন্তঃসত্তা মহিলাসহ ১০ জন আহত হয়েছে। আহতরা হচ্ছে টেকনাফ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়া, তার ভাই জাহেদ আলম, তার অন্তঃসত্তা স্ত্রী তসলিমা আক্তার, বৃদ্ধ পিতা হাজী সোনা মিয়া, গর্ভবর্তী বোন জেসমিন আক্তার, মোঃ আলমের স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মোঃ শফির ছেলে মোঃ রফিক, আহমদ হোছন, আবদুল করিমের ছেলে আবদুল হামিদ, মোঃ হোছন। আহতদেরকে টেকনাফ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।

এলাকাবাসীর সুত্রে জানা যায়, (২৮ জুলাই) শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১ টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার ১ নং ওয়াডের কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়ার বাড়ীতে পার্শ্ববর্তী এলাকার কিছু চিহ্নীত ইয়াবা ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন যুবক তার বাড়ীতে অতর্কিত হামলা চালায়। ঘটনার খবর পয়ে পুলিশের এসআই জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

সুত্রে আরো জানা যায়, মধ্য রাতে কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়ার বাড়ীতে মহিলা কাউন্সিলর কহিনুর আক্তারের স্বামী ও পুরাতন পল্লান পাড়ার নুরুল ইসলামের পুত্র শাহ আলমের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধদল স্বশস্ত্র হামলা চালায়। এ হামলায় শাহ আলম মিয়ার ছোট ভাই জাহিদ আলমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে টেকনাফে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থা বেশী অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার কক্সবাজার হাসপাতালের প্রেরণ করে। বর্তমানে তার অবস্থা আরো বেশী আশংকাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সংঘঠিত ঘটনার ব্যাপারে কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়া জানান, মহিলা কাউন্সিলর কহিনুর আক্তারের স্বামী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভূক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী শাহ আলমের সাথে আমার নামের মিল থাকায় যত্রতত্র আমার পদবী ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকার মাদক ও ইয়াবা পাচার করে যাচ্ছে। ঘটনাটি জানতে পারলে আমি তার বিরুদ্ধে মৌখিক প্রতিবাদ করি। এতে শাহ আলম ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে আমার বাড়ীতে এসে নাম ধরে ডাক দিলে গেইট খুলে দিই। পূর্বে থেকে উৎপেতে থাকা ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের উপর দা, কিরিচ ও লোহার রড দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

এব্যাপারে ২৯ জুলাই শনিবার কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়া বাদী হয়ে শাহ আলম মিয়াকে প্রধান আসামী করে টেকনাফ মডেল থানায় ৮ জনকে জ্ঞাত ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি এজাহার দায়ের করেছে।

এদিকে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাল্টা অপর একটি এজাহার দায়ের করেছে কাউন্সিলর কহিনুর আক্তারের স্বামী শাহ আলমের মামাতো ভাই মোঃ ইউনুছ। দায়েরকৃত এজাহার সুত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন রাত ১১ টার দিকে ইউনুছ, আয়াত উল্লাহ, জসিম, আবদু শুক্কুর, ফারুক ও জুবাইর মোটর সাইকেল যোগে হ্নীলা থেকে বাড়ীতে ফিরছিল। পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা সোনা মিয়ার পুত্র জাহেদ আলম, শাহ আলম, মোঃ আলম, মৃত কালু সওদাগরের পুত্র সোনা মিয়া, মোঃ রফিকসহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসীরা পথরোধ করে উপর্যপুরী ছুরি দিয়ে তাদের উপর আক্রমন চালায়। এসময় তাদের ছুরির আঘাতে আবদু শুক্কুর ও জসিম গুরুতর আহত হয়। আহতদের টেকনাফ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। একই দিন এঘটনায় আবদুল মতলবের পুত্র মোঃ ইউনুছ (৩৮) বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেছে।

কাউন্সিলর কহিনুর আক্তার জানান, আমি অসুস্থতার কারনে চট্টগ্রাম অবস্থান করছি। তবে এলাকায় একটি ঘটনার খবর শুনেছি। এই ঘটনায় আমার স্বামী জড়িত নই। অহেতুক আমার স্¦ামীকে হয়রানী করার জন্য এলাকার কিছু কুচক্রীমহল কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়াকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংঘঠিত ঘটনার সাথে জড়ানোর চেষ্টা করেছে। খবর নিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে আমি জানতে পারি শাহ আলম মিয়ার বাড়ীতে কে বা কারা ভাংচুর চালিয়েছে। এই ঘটনাটির সাথে আমার স্বামী সম্পৃক্ত নই। তাই আমি আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি ঘটনাটি সুস্থ ভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হউক।

এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফুজ্জামান জানান, ঘটনাটি শুনে, পুলিশের একটি টিম কাজ করছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: